আনিকা কবির শখ। মডেল ও অভিনেত্রী। দীপ্ত টেলিভিশনে প্রচার হচ্ছে তাঁর অভিনীত ধারাবাহিক ‘রূপনগর’। কায়সার আহমেদ পরিচালিত এ ধারাবাহিক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এমদাদুল হক মিলটন।
‘রূপনগর’ নাটকটিতে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, দারুণ সাড়া মিলছে। নাটকটি প্রকাশের পর থেকেই দর্শক-প্রতিক্রিয়া আমাকে অবাক করেছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাড়া পাচ্ছি। মনে হচ্ছে, ভিন্নধর্মী গল্প আর উপস্থাপনাকে দর্শক সত্যিই ভালোবাসেন। এরই মধ্যে নাটকটির আট পর্ব প্রচার হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম থেকেও ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি।
নাটকে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
দুর্দান্ত। কাজটি একটু চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রথমবার নারীকেন্দ্রিক গল্পের ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি। এটি আমার জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। এ ধরনের গল্পের কাজ ১ ঘণ্টার নাটকে বেশি হয়। ধারাবাহিকে হয় না বললেই চলে। একজন নারীকে কেন্দ্র করেই গল্পটি এগিয়েছে। এই নারী চরিত্রটিই আমি করছি। কায়সার ভাই আমার পছন্দের একজন নির্মাতা। তিনি যখন চরিত্রটি নিয়ে আলোচনা করেন, তখন একবাক্যেই রাজি হয়েছি। সবে তো নাটকটি শুরু হলো। এর মধ্যে অনেক ভিন্নতা আছে। দর্শক দেখলেই তা বুঝতে পারবেন।
ওয়েবেও কাজ করেছেন আপনি। টিভি নাটক আর ওয়েব সিরিজ–দুটোর মধ্যে কাজ করার অভিজ্ঞতায় আপনি কী পার্থক্য খুঁজে পান?
টিভি নাটকে কাজের সময়সীমা কম থাকে, তাই দ্রুত শেষ করতে হয়। ওয়েব সিরিজে চরিত্র গড়ে তোলার জন্য সময় ও সুযোগ বেশি থাকে। ফলে চরিত্রে গভীরতা আনার সুযোগ মেলে। অনেক আরাম করে কাজ করা যায়।
সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে রসায়ন নিয়ে দর্শকরা প্রায়ই কথা বলেন। এই রসায়ন তৈরি করতে একজন শিল্পী হিসেবে কী ধরনের প্রস্তুতি নেন?
সহ-অভিনেতার সঙ্গে আস্থা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করাই সবচেয়ে জরুরি। সেটে আমরা যত বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, পর্দায় রসায়ন তত বেশি ফুটে ওঠে।
এই সময়ের ব্যস্ততা কী নিয়ে?
প্রচার চলতি ধারাবাহিকের শুটিং নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটছে। আরেকটি নতুন ধারাবাহিক নিয়ে কথা হচ্ছে। পাকাপাকি হলে বিস্তারিত জানাতে পারব। একটি বিজ্ঞাপন নিয়েও কথা চলছে।
সিনেমায় আপনাকে খুব বেশি দেখা যায়নি। এটা কি সচেতন সিদ্ধান্ত, নাকি সঠিক প্রজেক্টের অপেক্ষা করছেন?
আমি সবসময় চাই অর্থবহ সিনেমায় কাজ করতে। ভালো গল্প ও চরিত্র খুঁজছি। অভিনয়ের জন্য অনেক প্রস্তাব আসছে। সত্যি বলতে লুফে নেওয়ার মতো সিনেমার প্রস্তাব এখনও পাইনি। আমার প্রথম সিনেমা ‘বলো না তুমি আমার’ ছিল শাকিব খানের সঙ্গে। দ্বিতীয় সিনেমা ‘অল্প অল্প প্রেমের গল্প’ ভালো গেছে। এরপর সিনেমা করার জন্য আমি তৈরি ছিলাম না। এখন যেহেতু সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা আছে, তাই একটু বুঝেশুনে পা ফেলতে চাই। আমার মনের মতো ক্যারেক্টার, ডিরেক্টর যদি পাই অবশ্যই আবার আমাকে সিনেমায় দেখা যাবে।
নাচ নিয়ে কিছু ভাবছেন?
নাচ থেকেই মিডিয়ায় আসা। পরে অভিনয়ে যুক্ত হয়েছি। এটি আমার ভালোবাসার জায়গা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে নাচের অনুষ্ঠান টিভিতে অনেক কমে গেছে। এ কারণে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে নাচ নিয়ে কিছু করার ইচ্ছা আছে। এরই মধ্যে অনলাইনে আমার নাচের ছোট ছোট রিলস করে ছেড়েছি। ভক্তদের সঙ্গে তা ভাগাভাগির পর দেখলাম, সবার প্রশংসা পাচ্ছি। যে কারণে কোনো গান পছন্দ হলেই সেই গানের সঙ্গে নাচ তুলে রাখি। সময়-সুযোগ মতো সেগুলো প্রকাশ করব।
দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ার আপনার। পেছনে ফিরে তাকালে কী দেখতে পান?
আমার পরিবারে কেউই মিডিয়ায় কাজ করে না। কিংবা মিডিয়াতে কোনো কাজের পরিকল্পনা ছিল না। আমি একজন ট্রিপিক্যাল মেয়ে ছিলাম। নাচ করতাম। মিডিয়াকে পেশা হিসেবে নেব বলে ভাবিনি। দর্শক আমাকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছেন। এটা আমার জন্য বড় আশীর্বাদ। সবার ভালোবাসার ডানায় ভর করে আগামীর পথ পাড়ি দিতে চাই।